যুগে যুগে আল্লাহতায়ালার অবাধ্যতা, নবীদের হত্যা এবং দুনিয়ার বুকে ফিতনা-ফাসাদ করেছে বনি ইসরায়েল। এজন্য বারবার লাঞ্ছিত-অপমানিত, ধ্বংস এবং বিতাড়িত হয়েছে তারা। কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার আগ পর্যন্ত এই চক্র চলমান থাকবে। বনি ইসরায়েলের এমন পরিণতির ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে আগে থেকেই বলে রেখেছেন আল্লাহতায়লা।পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেছেন, আমি বনী ইসরায়েলকে কিতাবে পরিষ্কার বলে দিয়েছি, তোমরা পৃথিবীর বুকে দুবার অনর্থ সৃষ্টি করবে এবং অত্যন্ত বড় ধরনের অবাধ্যতায় লিপ্ত হবে। (সুরা বনী-ইসরায়েল – ১৭:৪) অতঃপর যখন প্রতিশ্রুতি সেই প্রথম সময়টি এলো, তখন আমি তোমাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করলাম আমার কঠোর যোদ্ধা বান্দাদেরকে। অতঃপর তারা প্রতিটি জনপদের আনাচ-কানাচে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ল। এ ওয়াদা পূর্ণ হওয়ারই ছিল। (সুরা বনী-ইসরাইল – ১৭:৫)
মহান আল্লাহ আরও বলেন, অতঃপর আমি তোমাদের জন্য তাদের বিরুদ্ধে পালা ঘুরিয়ে দিলাম, তোমাদের ধন-সম্পদ ও পুত্রসন্তান দ্বারা সাহায্য করলাম এবং তোমাদের জনসংখ্যার দিক দিয়ে একটা বিরাট বাহিনীতে পরিণত করলাম। (সুরা বনী-ইসরায়েল – ১৭:৬) তোমরা যদি ভাল কর, তবে নিজেদেরই ভালো করবে এবং যদি মন্দ কর তবে তাও নিজেদের জন্যই। এরপর যখন দ্বিতীয় সে সময়টি এল, তখন অন্য বান্দাদের প্রেরণ করলাম, যাতে তোমাদের মুখমণ্ডল বিকৃত করে দেয়, আর মসজিদে ঢুকে পড়ে যেমন প্রথমবার ঢুকেছিল এবং যেখানেই জয়ী হয়, সেখানেই পুরোপুরি ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। (সুরা বনী-ইসরায়েল – ১৭:৭) হয়ত তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করবেন। কিন্তু যদি পুনরায় তদ্রূপ কর, আমিও পুনরায় তাই করব। আমি জাহান্নামকে কাফেরদের জন্যে কয়েদখানা করেছি। (সুরা বনী-ইসরায়েল – ১৭:৮)
সুরা বনী ইসরায়েলের এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, এই জাতি দুনিয়ার বুকে দুইবার ফাসাদ সৃষ্টি করবে। অতঃপর আল্লাহ তাদের পরাজিত করবেন। ধারণা করা হয়, প্রথম ঘটনাটি ইতোমধ্যে ঘটে গেছে। খ্রিস্টপূর্ব ৭২২ অব্দে বনী ইসরায়েলের একটি অংশকে জোরপূর্বক নির্বাসিত করে এসেরিয়ানরা। নব্য এসেরিয়ান রাজা তৃতীয় তিগলাথ পিলেসার এবং পঞ্চম সালমানেসার এই ইসরায়েলি সামাজ্র্য দখল করেছিলেন। তখন জেরুজালেম দখল করে নিয়েছিলেন এসেরিয়ান রাজারা। এটা ছিল দাউদ আ. এর তৈরি করা সাম্রাজ্যের পতন।