চাঁদপুরে মৃত ভেবে কবর দেয়ার জন্য আনা হলেও জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া সেই নবজাতক অবশেষে মারা গেছে। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের পৌর কবরস্থানে শিশুটিকে দাফনের প্রস্তুতির সময় নড়াচড়া লক্ষ্য করা গেলে তাকে উদ্ধার করা হয়। তবে উদ্ধারের ৮ ঘণ্টা পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাত ৯টার দিকে শিশুটি মারা যায়। এ ঘটনায় এলাকায় গভীর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর বাস স্ট্যান্ড পৌর কবরস্থানে কবর খোঁড়ার দায়িত্বে থাকা শ্রমিক শাহজাহানের কাছে এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি একটি কার্টনে করে শিশুটিকে মৃত বলে কবর দেয়ার জন্য হস্তান্তর করে। ওই ব্যক্তি শিশুটির বয়স দুই থেকে তিন মাস জানিয়ে বলেন শিশুটি মৃত। তাই দ্রুত কবরস্থ করার অনুরোধ জানান।
কবর খোদক শাহজাহান গণমাধ্যমকে বলেন, নামাজের সময় হয়ে গিয়েছিল। তাই আমি শিশুটিকে আমার সহকর্মীর কাছে রেখে নামাজে যাই। নামাজ শেষে ফিরে এসে সহকর্মীর কাছ থেকে জানতে পারি, কবরস্থ করার প্রস্তুতি নেয়ার সময় বাচ্চাটি নড়ছে। আমি নিজ চোখে দেখে নিশ্চিত হই শিশুটি জীবিত।
এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই কবরস্থানে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা ছুটে যান। তারা শিশুটিকে উদ্ধার করে দ্রুত চাঁদপুর ফেমাস স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়ে যান এবং এনআইসিইউতে ভর্তি করান।
এদিকে স্থানীয়রা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কবরস্থানে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও আশপাশের হোটেলগুলোর ভিডিও পরীক্ষা করলে শিশুটিকে ফেলে যাওয়া অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। তারা প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান, যে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এই অমানবিক কাজের সঙ্গে জড়িত, তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউনুস উল্যা বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে শিশুটিকে হাসপাতালে আনা হলে আমরা বিনা খরচে তার চিকিৎসা চালাই। কিন্তু রাত ৯টায় শিশুটি মারা যায়। এ নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে স্থানীয় সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সহযোগিতায় শিশুটির লাশ রাত আড়াইটায় দাফন করা হয় সেই কবরস্থানে।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, কবরস্থানে কোনো সিসিটিভি না থাকায় শিশুটিকে রেখে যাওয়া ব্যক্তির সন্ধান করতে পারিনি। তবে বিষয়টি নিয়ে আমাদের তদন্ত অব্যাহত।