আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদীর পানি সমতল বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। ফলে এই সঙ্গে জেলাগুলোর চরাঞ্চল ছাড়াও কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বৃষ্টিপাত ও দেশের নদ-নদীর হালনাগাদ তথ্য জানিয়ে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যদিও তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের (>৮৯ মি.মি./২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা কমে এসেছে। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তী ২ দিন তা হ্রাস পেতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদীর পানি সমতল বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং জেলাগুলোর সংশ্লিষ্ট চরাঞ্চল ও কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। তবে পরবর্তী ২ দিনে তিস্তা নদীর পানি সমতল হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
অন্যদিকে আগামী ৩ দিন পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলার ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পাশাপাশি বর্তমানে রংপুর বিভাগের অন্যান্য প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগের এসব নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী ২ দিন এসব নদীর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।
এছাড়া রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদ ও এর ভাটিতে যমুনা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। আগামী একদিন ব্ৰহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তী ৪ দিন পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে এই সময়ে এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
এদিকে রাজশাহী বিভাগের গঙ্গা নদীর পানি সমতল বর্তমানে হ্রাস পাচ্ছে ও এর ভাটিতে পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল রয়েছে। তবে গঙ্গা নদীর পানি বর্তমানে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২ দিন পর্যন্ত গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল ধীর গতিতে হ্রাস পেতে পারে এবং পরবর্তী একদিনে পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে এর পরবর্তী ২ দিনে তা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, বর্তমানে রাজশাহী বিভাগের করতোয়া, আত্রাই, বাঙালি ও ছোট যমুনা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে মহানন্দা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল ও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগের এসব নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে, যা পরবর্তী একদিন পর্যন্ত স্থিতিশীল ও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। আর এর পরবর্তী একদিনে নদীগুলোর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।
এদিকে সিলেট বিভাগের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৩ দিন এসব নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পাশাপাশি অন্যান্য প্রধান নদী- মনু, খোয়াই, ধলাই, ভুগাই ও সোমেশ্বরী ইত্যাদি নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। এছাড়া সারিগোয়াইন ও কংস নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল ও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী একদিন এসব নদীর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং পরবর্তী ২ দিনে পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, ফেনী, হালদা, মাতামুহুরী, গোমতী নদীর পানি সমতল বর্তমানে হ্রাস পাচ্ছে। পাশাপাশি সাঙ্গু নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল ও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত এসব নদীর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে। তবে পরবর্তী ২ দিনে চট্টগ্রাম বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মি.মি./২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা রয়েছে, যার কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, গোমতী ও ফেনী নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। সেই সঙ্গে হালদা, মাতামুহুরী ও সাঙ্গু নদীর পানি সমতল এই সময়ে স্থিতিশীল থাকতে পারে।
এছাড়া দেশের আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সংশ্লিষ্ট বঙ্গোপসাগর এলাকায় কোনো লঘুচাপ না থাকায় আগামী ৩ দিন পর্যন্ত বরিশাল ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় নদীগুলোয় স্বাভাবিক জোয়ার পরিলক্ষিত হতে পারে বলেও জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।