এলাকায় ধর্মভীরু হিসাবে পরিচিত বরগুনা-২ (বামনা-বেতাগী-পাথরঘাটা) এলাকার সাবেক এমপি রিমনের সম্পদের বর্ণনা শুনলে যে কারও চোখ কপালে উঠবে। পুরো নাম শওকত হাচানুর রহমান রিমন। একসময় ছিলেন পাথরঘাটার রায়হানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং সবশেষে এমপি। তার বাবা খলিলুর রহমান একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন পটুয়াখালী জেলা শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন। মুক্তিকামী বহু মানুষকে পাখির মতো গুলি করে মারার ইতিহাস ছিল খলিলের। যুদ্ধাপরাধী হিসাবে বিচার এখনো চলমান।
পাঁচ বছরে কীভাবে বিপুল সম্পদের মালিক হলেন তা নিয়ে এলাকাবাসীর প্রশ্ন। তার দেওয়া নির্বাচনি হলফনামার তথ্যের চেয় বহুগুণ সম্পদের তথ্য এখন দুদকের হাতে।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, ৬০৪ একর জমির মালিকানা রয়েছে তার। এর সঙ্গে রয়েছে প্লট ফ্ল্যাটসহ আরও বিপুল সম্পদ থাকার বর্ণনা। নির্বাচনি এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এমপি থাকাবস্থায় বিরোধপূর্ণ জমি কিনতেন তিনি। কেনার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করে তা দখল করতেন। সাহস করে তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে নেমে আসত হয়রানি। মামলা মারধর। অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি সাবেক এই এমপিকে। বন্ধ পাওয়া গেছে তার মোবাইল ফোনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগের সব অ্যাপ।
২০০১ সালে বিএনপির ক্ষমতায় থাকাকালীন পাথরঘাটার কাকচিড়া পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা লুটপাটের ঘটনায় করা মামলার এক নম্বর আসামি ছিলেন রিমন। সে সময় তার পাশে দাঁড়ায় মুক্তিযুদ্ধের দল আওয়ামী লীগ। ২০০৪ সালে পাথরঘাটার কাকচিড়ায় এক দলীয় জনসভায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে দলে নিয়ে নেন। এ নিয়ে তখন প্রতিবাদ করেছিল স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং মুক্তিযোদ্ধারা। কিন্তু তার কিছুই হয়নি। পরবর্তীতে তাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া থেকে শুরু করে এমপির দায়িত্ব পালনকালেও অব্যাহত ছিল এসব প্রতিবাদ।
সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন না পেলেও এর আগেই টানা তিনবারের এমপির তকমা পেয়ে যান তিনি। পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘বরগুনা-২ নির্বাচনি এলাকাটি মূলত ধর্মভীরু ভোটারদের ঘাঁটি। এখানে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরও এমপি হওয়ার রেকর্ড রয়েছে। সার্বক্ষণিক নিজেকে ধর্মীয় লেবাসে রাখতেন রাজাকারপুত্র রিমন।