ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার সামরিক বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েল। বুধবার দক্ষিণ গাজায় এক অভিযান চালিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইরানে গত জুলাইয়ে হামাসের সাবেক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করা হয়।এরপর সংগঠনটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন গাযায় সংগঠনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা ও ইসরায়েলের মোস্ট ওয়ান্টেড ইয়াহিয়া সিনওয়ার।তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে নাটকীয় মোড় নিল ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত–এর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ৮২৮তম ব্রিগেডের অভিযানে দক্ষিণ গাজায় তিনজন নিহত হন।এর মধ্যে একজনের ‘দাঁতের গঠন’ থেকে সিনওয়ার থাকতে পারেন বলে সন্দেহ করেন । ওই তিনজনের মরদেহের ডিএনএ টেস্টে শনাক্তের পর হামাস প্রধানের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছু জানায়নি হামাস।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল-১২ জানিয়েছে, গতকাল গাজার রাফার একটি ভবনে হামাসের কয়েকজন যোদ্ধাকে প্রবেশ করতে দেখে ইসরায়েলি সেনারা। এরপর সেখানে হামলা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। হামলার পর সেনারা সেখানে যাওয়ার পর সিনওয়ারের মতো দেখতে এক যোদ্ধাসহ মোট তিনজনের মরদেহ পায় তারা। এরপর আজ নিশ্চিত হওয়া গেছে ওই মরদেহটি সিনওয়ারেরই ছিল।
সংবাদমাধ্যমটি মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে পুলিশি পরীক্ষা-নিরীক্ষার একটি ছবি প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, সিনওয়ারের দাঁতের সঙ্গে মরদেহটির দাঁতের পুরোপুরি মিল রয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে পুলিশি পরীক্ষা-নিরীক্ষার একটি ছবি প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, সিনওয়ারের দাঁতের সঙ্গে মরদেহটির দাঁতের পুরোপুরি মিল রয়েছে।
হামাসের দুটি সূত্র সউদীর সংবাদমাধ্যম আশরাক আল-আসওয়াতকে সিনওয়ারের মৃত্যুর তথ্যটি নিশ্চিত করেছে। সূত্রগুলো জানিয়েছে, গাজার ভেতর এবং বাইরে থাকা নেতাদের সিনওয়ারের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে।
তারা আরও জানিয়েছেন, সিনওয়ারের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কয়েকদিন আগে সবার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সিনওয়ারের মরদেহের তিনটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে দেখা যাচ্ছে তিনি একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছেন। তার মাথায় গভীর ক্ষত রয়েছে। ওই সময় সিনওয়ার নিরাপত্তা ভেস্ট এবং হাতে একটি ঘড়ি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ছবিগুলো যাচাই বাছাই করে বলেছে, মরদেহটির চোখের ব্রু, চোখের নিচের একটি দাগ এবং দাঁতের সঙ্গে সিনওয়ারের আগের ছবির সম্পূর্ণ মিল রয়েছে। যার অর্থ এটি সিনওয়ারেরই মরদেহ ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু পরবর্তীতে এক সংবাদ সম্মেলনের ভাবে আনুষ্ঠানিকভাবে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ সময় ইসরায়েলী জিম্মিদের মুক্তি দিলে বাকি হামাস সদস্যদের হত্যা না করার ‘নিশ্চয়তা’ও দেন তিনি।