1.7 C
Munich
Monday, December 23, 2024

ড. ইউনূসের সঙ্গে মোদির সম্ভাব্য বৈঠক নিয়ে নতুন তথ্য দিলো ভারতীয় সংবাদমাধ্যম

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একান্ত বৈঠক হওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন অধিবেশনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে এই সাক্ষাৎ হতে পারে বলে অনেকের ধারণা ছিল। তবে এ নিয়ে হতাশাজনক খবর প্রকাশ করেছে হিন্দুস্তান টাইমস, লাইভ মিন্টসহ একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।

জাতিসংঘের সাধারণ সভায় যোগ দিতে আগামী সপ্তাহে দু’জনই নিউইয়র্কে যাচ্ছেন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন-সহ একাধিক রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে বৈঠক করলেও বাংলাদেশের নয়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কোনও দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হচ্ছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস। সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাতকারে ড. ইউনূসের মন্তব্যের জেরে এই বৈঠক বাতিল হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঢাকায় নিজ সরকারি বাসভবনে ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেয়া ওই সাক্ষাতকার শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত হয়। এতে ড. ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনার দল ছাড়া বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ইসলামপন্থী (জঙ্গিবাদী) ভারতের এমন ধারণা মোটেই ঠিক নয়। বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে জঙ্গিবাদের তকমা লাগিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানিয়ে ফেলার পায়তারা চলছে। ড. ইউনূসের এমন মন্তব্য ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ক্ষুব্ধ হয় বলে জানা গেছে। আর এতেই নরেন্দ্র মোদি সম্ভাব্য বৈঠকে যোগ দেয়া থেকে বিরত থাকবেন।

আরও পড়ুনঃ  যুদ্ধ জাহাজ নিয়ে ইরান-রাশিয়ার মহড়া, ছিল বাংলাদেশও

এর আগে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেছেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করবেন তিনি।

মূলত এ মাসের শেষ দিকে এ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে সার্ক রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গেও একটি ফটোসেশনে যোগ দেয়ার চেষ্টা করবেন বলেও জানান ড. ইউনূস। এ বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘নিশ্চয়ই, আমরা সাক্ষাতের চেষ্টা করব (ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি)। যদি সার্কের সব রাষ্ট্রপ্রধান একত্র হন ও ফটোসেশনে অংশ নেন, আমি চেষ্টা করব (তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের)।’

সাক্ষাৎকারে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সার্ক এক মহৎ উদ্দেশে গঠিত হলেও এটি এখন শুধু কাগজে সীমাবদ্ধ এবং এটি এখন কাজ করছে না। আমরা সার্কের নাম ভুলে গেছি; আমি সার্কের চেতনার পুনরুজ্জীবন ঘটানোর চেষ্টা করছি।’ আঞ্চলিক জোট সার্কের সদস্যদেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। এদিন ড. ইউনূস বলেন, ‘দীর্ঘদিন সার্ক শীর্ষ সম্মেলন হয়নি। আমরা যদি একত্র হতে পারি, তবে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।’

আরও পড়ুনঃ  ভারতের ওপর ক্ষেপেছেন ট্রাম্প, চাপাবেন নতুন যুদ্ধ

শান্তিতে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস উল্লেখ করেন, সার্কের অনুরূপ লক্ষ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়ে এ জোট অনেক কিছু অর্জন করেছে। একই রকম অর্জন এখনো করতে পারেনি সার্ক। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে ইউরোপের দেশগুলো অনেক কিছু অর্জন করেছে। সার্কের কাজ করার বিষয়টি আমাদেরও নিশ্চিত করতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দিকে তাকান, কত সুন্দরভাবে এটি কাজ করছে। পাকিস্তানকে নিয়ে যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে, তবে অন্য পথ খুঁজে বের করা যেতে পারে। কিন্তু সার্কের কার্যক্রম অবশ্যই থামানো উচিত নয়।’

২০১৬ সাল থেকেই খুব একটা কার্যকর নেই সার্ক। ওই বছর পাকিস্তানে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও একই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর জম্মু ও কাশ্মীরের উরিতে ভারতীয় সেনা ফাঁড়িতে হামলার পর ভারত ওই সম্মেলনে যোগ দেবে না বলে জানায়। পরে সম্মেলনটি বাতিল হয়ে যায়। সর্বশেষ তখন থেকেই এটি আর খুব একটা কার্যকর নেই।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশিদের সুখবর দিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

Advertisement
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দিতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সাধারণ পরিষদের উচ্চপর্যায়ের ৭৯তম এ অধিবেশন ২৪ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।

সর্বশেষ সংবাদ