ঝালকাঠির নলছিটির উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের তালতলা বাজারের বিভিন্ন দোকান ও সরকারি স্টলের ব্যবসায়ী ও ইজারাদারদের কাছ থেকে চাঁদা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. সহিদ খান ও কৃষক দলের সভাপতি আব্দুস সত্তার পিন্টুর বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তালতলা বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী ও ইজারাদারের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় বিএনপির অফিস খরচসহ বিভিন্ন বিষয় বলে টাকা দাবি করেন এবং কয়েকজনের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। যদি কেউ টাকা ফেরত চায় তাকে ধমক দেন পিন্টু। এ ছাড়া এর আগে টিসিবি ও রেশন কার্ডের পণ্য সরবরাহকারী গ্রাহকের কার্ড নিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।
গত ৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনার সরকারের সমর্থক ও নেতাদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার মতো ঘটনাও সুবিদপুর ইউনিয়নে ঘটে বলে লোক মুখে জানা যায়। সবকিছুই হচ্ছে নাকি এক নেতার ইশারায়।
চাঁদা নেওয়ার বিষয়ে বিএনপির একাধিক নেতা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘গুটি কয়েক লোক দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য তাদের সুবিধাভোগী অতি উৎসাহী কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছেন। যা আমাদের দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এসব কার্যক্রম বন্ধ করতে দলের উপজেলা ও জেলার নেতাদের কাছে অনুরোধ করেছি। একের পর এক ঘটনায় পুরো ইউনিয়নে একটি ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে।’
ইজারাদার তৈয়ব আলী বলেন, বিএনপির অফিস খরচের কথা বলে ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন কৃষকদলের সভাপতি আব্দুস সত্তার পিন্টু।
স্বরূপকাঠির ফার্নিচার মিস্ত্রি মামুনের কাছে সরকারি স্টল ১ বছরের জন্য ২০ হাজার টাকায় ভাড়া দেন তৎকালীন আওয়ামী নেতারা। তখন তিনি ১০ হাজার টাকা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকে। কিন্ত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতার স্বাদ পেলেও তালতলা বাজারের অসহায় দরিদ্র্য ফার্নিচার ব্যবসায়ী নিস্তার পাচ্ছেন না চাঁদার হাত থেকে। আওয়ামী লীগের নেতাদের চুক্তি মতে বাকি ১০ হাজার টাকা দাবি করেন বিএনপির সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শহিদ খান। বর্তমানে ফার্নিচার ব্যবসায়ীর ব্যবসা ভালো চলছে না। তাই তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করে আলাদা দোকান ভাড়া নিয়ে সেখানে চলে যাবেন বলে জানান।
শ্রমিক দলের সভাপতি মো. আজিজ খান, যুবদল নেতা জালাল খান, সুজন খান, সোহেল হাওলাদার, তরিকুল ইসলাম মিঠু, মিলন জোমাদ্দার, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মুজাম্মেল আরিন্দা, বিএনপির নেত মো. শামীম হাজি, ছাত্রদল নেতা ইমরান সরদার হিরুসহ একাধিক নেতা বলেন, চাঁদা নেয়ার বিষয়টি প্রমাণিত। এ রকম চাঁদাবাজ দলের জন্য হুমকি। তাদের লাগাম টানা জরুরি। ফার্নিচার ব্যবসায়ী সুমন মিস্ত্রিকে মালিকানা ঘরে ব্যবসা করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়।
চাঁদা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে সুবিদপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি আব্দুস সত্তার পিন্টু বলেন, ‘আমি কারও কাছে কোন টাকা চাইনি। কেউ আমাকে কোন টাকা দেয়নি। আমার নামে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’
এ বিষয়ে সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. সহিদ খানের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাই তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে নলছিটি উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিসুর রহমান হেলাল বলেন, চাঁদা নেওয়ার বিষয়টি জানা নেই। যদি কেউ অভিযোগ করে, তাহলে সত্যতা যাচাই করে দলের সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।