তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে বলে দাবি করছেন ইউক্রেনের সাবেক শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা ভ্যালারি জালুঝনি। তিনি বলেন, রাশিয়ার মিত্র দেশগুলো ইউক্রেন সংঘাতে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে। উত্তর কোরিয়া, চীন ও ইরানকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, কেউ সেনা, কেউ অস্ত্র দিয়ে এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ইউক্রেনস্কা প্রাভদার ‘ইউপি১০০’ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তৃতার সময় এসব কথা বলেন ভ্যালারি জালুঝনি। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে ইউক্রেনের দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ভ্যালারি জালুঝনি বলেন, ২০২৪ সালে এসে আমাদের প্রতীয়মান হচ্ছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু কিছু কারণে আমাদের অংশীদাররা এটি বুঝতে চায় না। তারা চেষ্টা করলে ইউক্রেনের ভূখণ্ডে এটি এখনও বন্ধ করা সম্ভব। আর তা না হলে এই যুদ্ধ আরও বিস্তৃত হবে এবং ইউক্রেনের সীমানা ছাড়িয়ে অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়বে।
ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সেনা ও চীনা সমরাস্ত্র যুক্ত রয়েছে দাবি করে সাবেক এই কমান্ডার বলেন, ইউক্রেনের সামনে ফ্রন্টলাইনে রয়েছে উত্তর কোরিয়ার সেনারা। চীনের অস্ত্র দিয়ে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করছে। ইউক্রেনে ইরানি ‘শাহেদি’ ড্রোনগুলো নির্লজ্জভাবে বেসামরিক মানুষকে হত্যা করছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার ১০ হাজার সেনা রয়েছেন। তারা রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করছেন। এ ছাড়া ইরানের শাহিদী ড্রোনও ব্যবহার করা হচ্ছে বলে দাবি করে আসছে কিয়েভ।
এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন সংঘাত এখন একটি আঞ্চলিক যুদ্ধ থেকে বৈশ্বিক সংঘাতে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে। এমন অবস্থায় পশ্চিমা দেশগুলোতে হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলেও জানান তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে এসব কথা বলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ভাষণে রুশ প্রেসিডেন্ট হুঁশিয়ার করে বলেন, যদি আগ্রাসী কার্যক্রম বৃদ্ধি পায়, আমরা সমানভাবে প্রতিক্রিয়া জানাব। যেসব দেশ তাদের অস্ত্র আমাদের সামরিক স্থাপনায় ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছে, তাদের সামরিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত করার অধিকার রাশিয়ার রয়েছে। কেউ যদি এটি নিয়ে সন্দেহ করে, তবে তারা ভুল করছে। এর প্রতিক্রিয়া অবশ্যই হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়ায় পশ্চিমা অস্ত্রের ব্যবহার এবং রাশিয়ার পাল্টা হামলা বিশ্বকে নতুন এক সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আর এতে যুক্ত হয়েছে রাশিয়ার গভীরে হামলার ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসন থেকে ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি।