দামেস্ক দখলের পর যা বললেন বিদ্রোহী নেতা আল জুলানি
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস)। গোষ্ঠীটি এক ঘোষণায় জানিয়েছে, ‘অত্যাচারী প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের কবল থেকে দেশ এখন মুক্ত’।
বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, ২৪ বছর ধরে সিরিয়া শাসন করা প্রেসিডেন্ট দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। সিরীয় জনগণ দামেস্ক, আলেপ্পো ও হোমসসহ সবগুলো শহরের রাস্তায় নেমে এসেছেন।
এদিকে দামেস্ক দখলের পর এইচটিএস-এর প্রধান আবু মোহাম্মদ আল জুলানি দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য দিয়েছেন। টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন,
দামেস্কে উপস্থিত সব বাহিনীকে সরকারি প্রতিষ্ঠান দখল করা নিষিদ্ধ করা হল এবং ‘আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত সেগুলো সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে থাকবে’।
এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ গাজি আল জালালিও বক্তব্য দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, তিনি দামেস্কে নিজ বাড়িতেই রয়েছেন এবং সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সিরিয়ার জনগণ যাকেই নেতা হিসেবে বেছে নেবে তাকে সহযোগিতা করতে তিনি প্রস্তুত আছেন।
প্রধানমন্ত্রী জালালি আরও বলেন, ‘আমি মন্ত্রী পরিষদে থাকব এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত আছি। মন্ত্রিপরিষদ সিরিয়ার প্রতিটি নাগরিকের কাছে আবেদন জানাচ্ছে যারা এই দেশের ভবিষ্যত ও সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বিগ্ন। এবং আমি নাগরিকদেরকে জনসাধারণের এবং রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির ক্ষতি না করার জন্য বলছি।’
রয়টার্সের প্রতিবেদন মতে, রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করতে শুরু করেন বিদ্রোহীরা। এর মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে পালান।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে সিনিয়র দুই সেনা কর্মকর্তার বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বাশার আল আসাদ দামেস্ক ছাড়লেও কোথায় গেছেন, সেটা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, একটি ব্যক্তিগত বিমান দামেস্ক বিমানবন্দর ছেড়ে গেছে। বিমানটিতে সম্ভবত আসাদ রয়েছেন। বিমানটি ছাড়ার সময় সেখানে সরকারী সেনা উপস্থিত ছিল।
এরপর বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস) তাদের টেলিগ্রামে এক পোস্টে বলে, ‘একটি অন্ধকার যুগের সমাপ্তি হয়েছে এবং একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছে’।
আসাদ সরকারের অর্ধ শতাব্দীর শাসনামলে বাস্তুচ্যুত বা কারাগারে বন্দি লোকেরা এখন ঘরে ফিরতে পারবে, বলছে বিদ্রোহীরা। এইচটিএস আরও বলেছে, এখন একটি ‘নতুন সিরিয়া’ গড়ে তোলা হবে যেখানে ‘সবাই শান্তিতে বসবাস করবে এবং ন্যায়বিচারের জয় হবে।’