2.1 C
Munich
Monday, December 23, 2024

ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা কি ইরানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করল!

জনপ্রিয় সংবাদ

মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিশালী দেশ ইরান এবং আশপাশের দেশগুলোতে থাকা তেহরান সমর্থিত সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলো ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামকে অব্যাহত সমর্থন দিয়ে আসছে। ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর হয়ে লড়াইয়েও অংশ নেয় তারা। সে হিসেবে ইরান সমর্থিত সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর থাকার কথা ছিল। কিন্তু তা না করে তারা বিদ্রোহীদের পক্ষ নিয়েছে।

এতে স্বাভাকিভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা কি ইরানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করল? কারণ ফিলিস্তিনিদের জন্য লড়াই করার কারণে ইরানের অনেক শীর্ষ কর্মকর্তাকে প্রাণ হারাতে হয়েছে। পাশাপাশি লেবাননে শত শত যোদ্ধা প্রাণ হারিয়েছেন।

ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর নেপথ্যে প্রধান কারণ হলো আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি। সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী প্রধান আল-জোলানি সব সময় ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ছিলেন। আর এর প্রতিদানস্বরূপ ২০১১ সালে আসাদের গড়ে ওঠা সিরিয়ার সুন্নি মুসলিমদের আন্দোলনের প্রতি প্রথমবার প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছিল ফিলিস্তিনিরা।

আরও পড়ুনঃ  ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পাকিস্তান, দেশবাসীকে নামাজ পড়ে দোয়া করার আহবান

বাশার আল আসাদ সিরিয়ার শিয়াপন্থি সংখ্যালঘু আলাউইত সম্প্রদায়ের সদস্য। আর ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের মতাদর্শগত শিকড় মিসরের সুন্নি ইসলামপন্থি মুসলিম ব্রাদারহুড থেকে উদ্ভূত। সিরিয়ায় আসাদের শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হলে তাদের ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন চালিয়েছিলেন আসাদ। আর এই দমন-নিপীড়নের শিকার হয়েছিল মূলত সুন্নি মুসলিমরা।

আসাদ তার ক্ষমতার জন্য সুন্নি মুসলিমদের হুমকি মনে করতে থাকেন। সুন্নি মুসলিমদের গণগ্রেপ্তার এবং বহু মানুষকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেন। ফলে একসময় আসাদ থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নেয় আল-জোলানি নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা। এরপর ২০১২ সালে দামেস্কে নিজেদের সদরদপ্তর খালি করে সংগঠনটি, যা আসাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও তাদের পৃষ্ঠপোষক ইরানকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল।

পরে ২০২২ সালে আসাদ নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী প্রধান গোষ্ঠী হামাস। ওই সময় দামেস্কে একটি প্রতিনিধি দল পাঠায় তারা। এই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে বৈঠক করেন।

আরও পড়ুনঃ  ট্রাম্পের ‘ইসরায়েলপন্থী’ ভাইস প্রেসিডেন্ট কে এই জেডি ভ্যান্স

এরপর লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী ও ইসরায়েলের বিরোধিতাকারী ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সঙ্গে নিয়ে একটি ‘প্রতিরোধ অক্ষ’ গঠন করে আসাদ নেতৃত্বাধীন সিরিয়া এবং ইরান। তাদের সঙ্গ দেয় অন্যতম পরাশক্তি রাশিয়া।

তবে বাশার আল আসাদের পতনের পর এ সম্পর্ক অনেকটা বদলে গেছে। ফিলিস্তিনিরা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি বাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন এই গোষ্ঠী এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা সিরিয়ার মহান জনগণের পাশে রয়েছে। সিরিয়ার জনগণের আকাঙ্ক্ষা, স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক পছন্দকে তারা সম্মান করে।

সর্বশেষ সংবাদ