রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ সংলগ্ন বিভিন্ন দোকানে চাঁদাবাজি ও বহিরাগতদের দিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারের প্রতিবাদ করায় নিজ সংগঠনের নেতাকর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রফিকুল আমান।
গত রোববার কলেজের ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধর ও সংগঠনের কিছু নেতাকর্মীর অপকর্মের প্রতিবাদ করায় তাকে বেদম মারধর করা হয়েছে।
রফিকুল আমান অভিযোগ করে কালবেলাকে জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. সোহেল আহমেদ এবং কর্মী জামিল, ফয়সাল, শুভ ও সাদ আধিপত্য বিস্তারের জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অনুপ্রবেশ করিয়েছে। তারা বহিরাগতদের কলেজে এনে পরিবেশ নষ্ট করছেন। মাদক বিক্রি, সেবন ও শিক্ষার্থীদের ওপর মারধরের মাধ্যমে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। এটি বিএনপির নির্দেশের লঙ্ঘন। অভিযুক্তরা সবাই ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের অনুসারী।
এর আগে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রফিকুল আমান। তিনি সিদ্ধেশরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. সোহেল আহমেদসহ অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানান। মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অদ্যাবধি কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা হয়নি বলে জানান আমান। অবশ্য ঘটনার সময়কার ভিডিও ফুটেজেও তাকে মারধর করতে দেখা গেছে।
মারধরের শিকার ছাত্রদল নেতা আমানের অভিযোগ, কলেজ ক্যাম্পাসের আশপাশের মার্কেট ও দোকান থেকে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতারা তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। গত ৩ অক্টোবর কলেজের ইন্টারমিডিয়েটে পড়া দুজন শিক্ষার্থীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় সোহেল ও তার সমর্থকরা নিজেদের জড়িয়ে ফেলে। তারা দেশীয় অস্ত্র, চাইনিজ কুড়াল, দা, ছুরি নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে ছাত্রদলের সদস্য সচিব শেখ আহমেদ ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সম্রাট শিকদারের অনুসারী ও শিক্ষকদের চেষ্টায় তাকে রক্ষা করা সম্ভব হয়।
কলেজের এমন পরিস্থিতি দেখে বিষয়টি জানাতে ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে গত ৬ অক্টোবর অধ্যক্ষের কক্ষে যান জানিয়ে রফিকুল আমান বলেন, এদিন সোহেল ও তার সমর্থকরা তাদের অনুসরণ করেন। পরে শিক্ষক প্রতিনিধির সহযোগিতায় কলেজ থেকে বের করে তারা ৩০-৪০ জন মারধর শুরু করে।
একপর্যায়ে মগবাজারের পরিত্যক্ত ভবনের কাছে নিয়ে হাতুড়ি, রড, ইটের টুকরো ও লাঠি দিয়ে পায়ে আঘাত করতে থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা বলতে থাকে, ওপরের নির্দেশ আছে। প্রথমে তোর পা ভাঙতে হবে। পরে মেরে লাশ গুম করে দিতে হবে। পরে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ছেলে এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, হামলাকারীরা হলেন- সোহেল (আহ্বায়ক সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদল), ফয়সাল (ছাত্রদল কর্মী), জামিল (ছাত্রদল কর্মী), শুভ (ছাত্রদল কর্মী), সাদ (ছাত্রদল কর্মী)
তিনি হামলাকারীদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. সোহেল আহমেদ বলেন, ক্যাম্পাসের বাইরে গ্যানজাম হয়েছে বলে শুনেছি। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে বলেন, রফিকুল আমান কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। আগের মতো আমাদের কর্মসূচিতে আসে না। মারধরের বিষয়টি ঢাকা মহানগর পূর্বের সিনিয়র নেতারা দেখছেন। আমান যেসব অভিযোগ করেছে সেগুলো মিথ্যা।