টানা প্রায় ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ যা করেছে এবং যেভাবে গণঅভ্যুত্থানে তাদের বিদায় হয়েছে, সেটা বিএনপি করলেও পরিণতি একই হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এজন্য দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করেছেন তিনি। গতকাল দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা বিএনপি আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমরা এই মুক্ত বাংলাদেশে বাস করছি, কিন্তু মনে রাখবেন- এই মুহূর্ত সেই পর্যন্তই মুক্ত ও স্বাধীন থাকবে, যতদিন আমরা মুক্ত ও স্বাধীন রাখতে পারবো। আমরাও আওয়ামী লীগের মতো শুরু করলে তাদের মতো একই দশা আমাদেরও হবে। সেজন্য বিশেষ করে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে হবে। কারও প্রতি অন্যায় অত্যাচার এবং অবিচার করা যাবে না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার আন্দোলনে দুই হাজার ছাত্র-জনতাকে খুন করেছে। অনেকের হাত-পা কেটে ফেলতে হয়েছে। কারও মাথার খুলি উড়ে গেছে।’ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নির্ভয় দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরা আমাদের আমানত। তাদের রক্ষা করার দায়িত্বও আমাদের। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, যে আমানতের খেয়ানত করে সে মুমিন না। তাই এই আমানতকে রক্ষা করতে হবে। সামনে তাদের পূজা আসছে। সেখানে কোথাও যেন কোনো অঘটন না ঘটে, কারও কোথাও কোনো সম্পত্তিসহ আত্মীয়স্বজনদের ওপর যেন অত্যাচার না হয় সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘অতীতে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। তাই সবাই যেন ভোট দিতে পারে, যার ভোট সেই দেবে, যাকে খুশি তাকে দেবে। সেই ভোটের মধ্যদিয়ে আমরা আমাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবো। আগের সিস্টেম থেকে বেরিয়ে আসার এবং ঠিক করার জন্য বর্তমান সরকারকে সময় দিতে হবে। তারা নিরপেক্ষ মানুষ, কোনো দল করেন না। কিন্তু দেশটাকে ভালোবেসে দেশের জন্য কিছু কাজ করতে চান। তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে সবার সহযোগিতা করতে হবে।’
ভারত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত অনেক খারাপ কাজ করে। সীমান্তে গুলি করে মানুষ মারে। আমরা ভালোভাবে থাকতে চাই তাদের সঙ্গে। প্রতিবেশী হিসেবে থাকতে চাই তাদের সঙ্গে। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনো অন্যায় করা হলে তার প্রতিবাদ আমরা জানাবো।
জনসভায় হরিপুর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর করিম, সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, জেলা মহিলাদের সভাপতি ফারাতুন নাহার পেরিস, জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েসসহ উপজেলার বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ এবং সমর্থকরা।