বগুড়ার ধুনট উপজেলার শ্রাবণী আক্তার খুশি (১৫) নামের এক তরুণী মেয়ে থেকে ছেলে হিসেবে রূপান্তর হয়েছে। বর্তমানে তার নাম রাখা হয়েছে ওমর ফারুক শ্রাবণ। সে উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের সরুগ্রাম পূর্বপাড়া এলাকার খোকন মিয়ার বড় মেয়ে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তরিত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষ এক নজর দেখার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে তার বাড়িতে।
জানা যায়, শ্রাবণী আক্তার খুশি স্থানীয় এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এক বছর থেকে আচরণে ছেলে সাদৃশ্যতা লক্ষ করা যায়। গত ৬ মাস আগে থেকে শ্রাবণীকে নিয়মিত ডাক্তারি পরীক্ষা করায় তার পরিবার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তরুণীর বাড়িতে মানুষের ভিড়। প্রতিবেশীরা গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আছেন বাড়ির সামনের উঠানে। দূরদূরান্ত থেকেও দলবেঁধে উৎসুক জনতা ছুটে আসছেন তাদের বাড়িতে। আগের জীবন এবং বদলে যাওয়া জীবন নিয়ে প্রশ্নের যেন শেষ নেই মানুষের। জনতার ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিবারকে।
শ্রাবণী আক্তার খুশি জানান, মেয়ে থেকে ছেলে রূপান্তরিত হওয়ায় আমার কোনো দুঃখ নেই। বাবার কাজে সহযোগিতা করতে পারব ভেবে আমি অনেকটা খুশি হয়েছি। বর্তমানে আমার নাম রাখা হয়েছে ওমর ফারুক শ্রাবণ।
এ বিষয়ে শ্রাবণী আক্তার খুশির বাবা খোকন মিয়া কালবেলাকে জানান, আমার মেয়ের আচার-আচরণ পরিবর্তনের পর থেকে আমি নিয়মিত ডাক্তারি পরীক্ষা করিয়েছি। গত ৬ মাস নানা ধরনের মেডিকেল পরীক্ষা শেষে আমার মেয়ে ছেলেতে রূপান্তর হয়েছে বলে ডাক্তার জানিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে বাড়িতে আসি। পরে আমার বাড়ির মুরব্বিদের উপস্থিতিতে আমার মেয়েকে ছেলেদের পোশাক পরিয়ে দেই। শনিবার সকালে মুরব্বিদের সঙ্গে পরামর্শ করে মাথার চুল কেটে আমার মেয়ের শ্রাবণী আক্তার খুশি নামটি পরিবর্তন করে ওমর ফারুক শ্রাবণ রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমার ৩ মেয়ে ছিল। কোনো ছেলে সন্তান ছিল না। এজন্য অনেকের অনেক রকম কথা শুনতে হয়েছে। তবে আমার বড় মেয়ে ছেলে হিসেবে রূপান্তরিত হওয়ায় আমি ও আমার পরিবার খুব খুশি।
ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাজ্জাদ কাদির কালবেলাকে বলেন, হরমোন পরিবর্তনে এমনটি হতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে ছোট অপারেশনের প্রয়োজন হয়।
তিনি আরও বলেন, শ্রাবণীর বিষয়টি আমার জানা নেই। আগামীকাল রোববার সরেজমিনে গিয়ে খোঁজখবর করে দেখব। সে সঙ্গে কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তারও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও চিকিৎসার সব দায়িত্ব আমরা নেব।